হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম, টেকনাফ:
টেকনাফে ভয়াবহ ভুমি ধ্বসের ঘটনা ঘটেছে। বিশাল ভুমি সোজা নিচের দিকে দেবে গেছে। টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং মডেল ইউনিয়নের মিনা বাজার টিলাপাড়া নামক স্থানে ঘটেছে এ ঘটনা। তবে ভয়াবহ ভুমি ধ্বসের এ ঘটনায় ভুমির গাছপালা, বসতবাড়ি এবং বসতবাড়িতে থাকা এক শিশু, এক জন বৃদ্ধা এবং এক যুবক আলৌকিকভাবে অক্ষত রয়েছে। এধরণের ঘটনা টেকনাফের ইতিহাসে এটাই প্রথম। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় অজানা আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। মানুষ দলে দলে আলৌকিক ও অবিশ্বাস্য এ ঘটনা দেখার জন্য ভিড় জমালেও স্থানীয় প্রশাসন এব্যাপারে বেখবর।
১০ ডিসেম্বর বিকালে সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে জানা যায়, প্রতিদিনের মতো সকলেই ঘুমিয়ে পড়ে। রাত আড়াইটার দিকে মৃত আলী হোছনের মেয়ে বিধবা সখিনা খাতুনের (৫০) বসতবাড়িসহ পুরো ভিটাই নিচের দিকে ধসে পড়ে। ঘটনাটি অন্যান্য পাহাড় ধ্বসের মতো ঘটনা নয়। পাহাড় ধ্বসে ভেঙ্গে ঢালুতে পড়ে। ঘরবাড়ি, গাছপালা সবই ভেঙ্গে চুরমার হয়ে একাকার হয়। মানুষ থাকলে চাপা পড়ে। কিন্ত এটি সম্পুর্ণ ভিন্ন। পুরো জমি সোজা নিচের দিকেই ধ্বসে বা দেবে গেছে। যা আলৌকিক এবং খোদায়ী গজব বলে অভিহিত করেছেন স্থানীয় বাসিন্দাগণ।
সরেজমিন পরিদর্শনকালে মৃত আলী হোছনের মেয়ে বিধবা সখিনা খাতুন বলেন, ‘বাড়িতে আমি, আমার সহোদর ছোট ভাই আলী আহমদ (৩৪) এবং আমার পুত্র হাফেজ মোক্তার আহমদের ছেলে মোহাম্মদ (১২) ছিলাম। প্রতিদিনের মতো আমরা ঘুমিয়ে পড়ি। রাত আড়াইটার দিকে হঠাৎ ভুমি নড়ে উঠে। তাড়াতাড়ি উঠে দেখি আমরা, বসতবাড়ি এবং পুরো বসত ভিটা অন্ততঃ ১০ হাত নিচে। তবে ভুমির গাছপালা, বসতবাড়ি সবই অক্ষত আছে’।
পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, টিন ও বেড়া দিয়ে পলিথিনের ছাউনীর ঘর। উত্তরমুখী ঘরের দরজা। ঘরের দক্ষিণ উঠানে কয়েকটি ফলজ গাছ। সবই অক্ষত এবং সোজা অবস্থায় রয়েছে। যা আলৌকিক ও অবিশ্বাস্য ঘটনা। দেবে যাওয়া ভুমির আয়তণ হবে প্রায় ৫০ ফুট লম্বা এবং প্রায় ২০ ফুট প্রস্থ। আর অন্ততঃ ২০ ফুট মতো নিচের দিকে দেবে গেছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে টেকনাফ আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়ার প্রধান পরিচালক, কক্সবাজার ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের প্রতিষ্টাতা পরিচালক, বড়ডেইল ও জাদিমুরা মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্টানের পরিচালক, একাধিক গ্রন্থ প্রণেতা, আর্ন্তজাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত, দৈনিক সাগরদেশ ও মাসিক আল-আবরার পত্রিকার প্রধান সম্পাদক আল্লামা মুফতী আলহাজ্ব কিফায়তুল্লাহ শফীক্ব তিরমিজি শরীফের হযরত আলী (রাজিঃ) বর্ণণাকারীর উদৃতি দিয়ে বলেন, ‘মানুষ যখন বড় বড় ১৫টি গুনাহে লিপ্ত হবে, তখন মানুষকে সতর্ক করার জন্য এধরণের আলৌকিক ঘটনা এবং দৃষ্টান্ত দেখান। জাতি তওবা করে সৎ পথে ফিরে না আসলে আরও বড় ধরণের অঘটনের আশংকা রয়েছে’।
হোয়াইক্যং মডেল ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আলহাজ্ব মাওলানা নুর আহমদ আনোয়ারী বলেন ‘বিষয়টি শুনেছি। তবে জরুরী কাজে কক্সবাজারে থাকায় সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার সুযোগ হয়নি’।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন সিদ্দিক বলেন ‘এবিষয়টি সম্পর্কে কেউ আমাকে অবহিত করেনি। এ ধরণের ব্যতিক্রমধর্মী ঘটনার নেপথ্যে বৈজ্ঞানিক কিছু বক্তব্য আছে। আশেপাশে কেউ ভুমি কাটছে কিনা তা দেখে অভিযান চালিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে’।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।